মোফাকখারুল পর্ব -০১

সপ্তাহে পাঁচদিন সকাল আটটার সময় আমার মেজাজ খারাপ থাকে।কারন ঐ পাঁচদিন আটটায় ক্লাস থাকে।রাত চারটা-পাঁচটা পর্যন্ত জেগে থেকে কেইবা আটটায় ক্লাস নামক জিনিসটা করতে যায়।তারপরেও যাই,ভাগ্যের ফেরে যেতে হয়।পিছনের বেন্চে বসে বই সামনে নিয়ে পড়ার ভান ধরে ঝিমুতে থাকি।সেদিনও সকালে ঝিমুচ্ছিলাম,মনুষ্যকন্ঠে আমার নাম শুনে তন্দ্রাবিলোপ ঘটে।"এই কায়েস ঘুমাচ্ছিল"।আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।কোন শালা আবার সাতসকালে ডাকাডাকি করে।আমি চোঁখ মেলে চাই,মোফাকখারুল ডাকছে।আমি মোফাকখারুলকে দেখে অবাক হই।এই ফাষ্ট বেন্চার এখানে কি করছে।মোফাকখারুল করুনামাখা কন্ঠে বলে কায়েস আমিতো শেষ।আমি মোফাকখারুলের শেষ হওয়ার কোন কারন খুঁজে পাইনা।যুগপৎভদ্র এবং বলদ(!) ছেলে মোফাকখারুল।সকালে বাপের গাড়ীতে চেপে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে আসে,প্রথম বেন্চে বসে আটটা থেকে একটা পর্যন্ত মাছিমাড়া কেরানীর মত স্যারদের লেকচার তোলে,ল্যাব থাকলে আড়াইটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে ল্যাব করে,মাঝের এক-দেড় ঘন্টা বাসা থেকে আনা কাটলেট আর সেন্ডুইচ খেয়ে লাইব্রেরীতে পড়াশুনা করে আর ক্লাসটেষ্টে অনবরত বিশে বিশ পেতে থাকে।ক্লাসের সুন্দরী মেয়েরা মোফাকখারুলের সাথে ন্যাকামি করে,একটু পড়াটা বুঝাওনা মোফাকখারুল।আমার মেজাজটা খারাপ হয়।শালা মর তুই!কিন্তু আমি জানি এ একটা আধা না পুরা বলদ,দুনিয়াদারী সম্বন্ধে এর কোন আইডিয়া নাই।কোথা থেকে একদিন শুনে এসেছে নীল ছবি নামে একধরনের ছবি আছে তারপর দু-তিনদিন আমাকে জ্বালিয়েছে নীল ছবি কি,নীল ছবি কি বলে।আমি বলিনি ,বলেছি আছে না কত ধরনের ছবি আছে দুনিয়ায়,এটা মনে হয় কোন বিশেষ দেশের তৈরি ছবি।বেটা বিশ্বাস করেছে,বলদ না!বিশ্বাস তো করবেই।তো মোফাকখারুলের সমস্যার কথা শুনে আমারও কিছুটা কৌতুহলের উদ্রেক হয়।আমি বলি ক্যান কি হইছে।সে আবার বলে কায়েস আমি তো শেষ,মানুষে আমাকে খারাপ ভাবছে।আমি বলি আরে খুলে বল তো কি হইছে।সে বলে নীলা নাকি তাকে বলেছে সে নাকি খুব অশ্লীল।তার সাথে আর কথা বলবে না। -ক্যানো তুমি তাকে কি বলছ -আরে আমি বলেছি তুমি কি পেন্টিটা পড়ছ আমি ভাবি কাম সারছে আজ।আমি জানতে চাই আর কি সে বলছে। - আর কি বলব।এই কথা বলার পরেই তো সে মুখ লাল করে ফেলল।আমি বললাম আমি গতকাল পেন্টি পড়েছি।খুব ভালো লাগছে পেন্টিটা পড়ে।অনেক জিনিসই তো পড়লাম,কিন্তু এটার মত ভাল লাগলো না কিছু।আমি বললাম পেন্টির কথা বলা তোমার ঠিক হয়নি।ও আকাশ থেকে পড়ে।বলে -আরে কত কিছুই তো আমরা সংক্ষেপে বলি।ডাটা কমুনিকেশন কোর্সটাকে গতবার ডাটাকম বললামনা,প্যাটার্ন রিকগনিকেশনকেও তো পিআর বলি।আমি বলি হ্যাঁ ঠিক আছে,কিন্তু,,,,।ও আমার কথা শেষ করতে দেয়না। -ডাটা কমুনিকেশনকে ডাটাকম,প্যাটার্ন রিকগনিকেশনকে পিআর বললে সমস্যা যদি না থাকে তাহলে মাইক্রোপ্রসেসর কোর্সের ইন্টেলের পেন্টিয়াম মাইক্রোপ্রসেসরকে পেন্টি বলতে সমস্যা কোথায়।স্যারই তো একদিন বলেছিল। আমি বিষম খাই।মাছি মারা কেরানী ছাত্র হওয়ার বিপদ বুঝতে পারি।মোফাকখারুলকে আসল কথা বলিনা।শালা মেয়েদের সাথে দহরম-মহরম,নে এবার বোঝ ঠেলা।এবার যদি মেয়েদের ন্যাকামিটা কমে।আমি মিটিমিটি হেসে আবার ঝিমুতে থাকি।